ঢাকা | এপ্রিল ২৬, ২০২৪ - ৬:৩৮ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও গরম কমেনি

  • আপডেট: Saturday, April 16, 2022 - 10:45 pm

স্টাফ রিপোর্টার: তীব্র খরায় পুড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চল। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রকৃতি ধারণ করেছে রুদ্রমূর্তি। যেন আগুন ঝরছে রোদে। গত শুক্রবার রাজশাহীতে তাপমাত্রার পারদ চড়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটিই চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।

শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও গরম একটুও কমেনি। এ দিন রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. গাউসুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। এরমধ্যেই তাপমাত্রা সাত বছরের রেকর্ড হয়েছে। বৃষ্টি না হলে আরও কয়েকদিন এমন তাপদাহ চলতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এটিই এখন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ২০০০ সালে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার একই তাপমাত্রা হয়।

তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটি মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এ ছাড়া ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালেই সেটি মাঝারি এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালে সেটি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। সে অনুযায়ী শুক্রবার তীব্র তাপদাহ থেকে মাঝারি তাপদাহে নেমেছে। তবে গরম কমেনি।

রাজশাহীতে প্রখর সূর্যের তাপে হাঁসফাস করছেন মানুষ। অব্যাহত তাপপ্রবাহে সাধারণ নাভিশ্বাস উঠেছে এই অঞ্চলের মানুষের। একটু বৃষ্টি ও শীতল হাওয়ার পরশ পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে প্রাণীকূল। তবুও দেখা নেই কাঙ্খিত বৃষ্টির। এমন পরিস্থিতিতে রোজার মধ্যে এই গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। গরমের কারণে বেকায়দায় পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। রিকশাচালক, দিনমজুর, শ্রমিক ও কৃষকদের কাজ করতে হচ্ছে তীব্র খরতাপের মধ্যেই। আবার বিদ্যুৎ চলে গেলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন ঘরে থাকা মানুষও।

শনিবার দুপুরে নগরীর দড়িখড়বোনা রেলক্রসিংয়ের পাশে কালভার্ট নির্মাণের কাজ করছিলেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একদল নারী-পুরুষ। কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু পর পর তাঁরা গলা ভেজাচ্ছিলেন পানিতে। সুমিতা কিসকু নামের এক নারী বললেন, এই গরমে কাজ করতে গিয়ে শরীর থেকে শুধু পানি ঝরছে। গলা শুকিয়ে আসছে। তাই একটু পর পর পানি খাচ্ছেন।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. গাউসুজ্জামান বলেন, আগের দিনের চেয়ে শনিবার তাপমাত্রা একটু কমেছে। তবে গরম তেমন কমেনি। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমার লক্ষণ নেই। তিনি জানান, আকাশে হালকা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে না। তাই বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানাতে পারেননি তিনি।